1. admin@upokulbarta24.com : admin : Sohel Mahamud
  2. bangladesh@upokulbarta.news : যুগ্ম সম্পাদক : যুগ্ম সম্পাদক
  3. bholasadar@upokulbarta.news : বার্তা সম্পাদক : বার্তা সম্পাদক
বৃহস্পতিবার, ২২ মে ২০২৫, ০৩:১৫ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
ভোলায় জনদুর্ভোগ কমাতে ইউপি সদস্যদের নিয়ে গ্রাম আদালত বিষয়ক প্রশিক্ষণ অনুষ্ঠিত আসন্ন বাজেটে তামাকপণ্যের কর ও মূল্য বৃদ্ধির দাবি বোরহানউদ্দিনে মাসব্যাপী শিল্প ও বাণিজ্য মেলার উদ্বোধন মনপুরায় মাদক ব্যবসায়ী আসমার বাড়ি থেকে কোর্টের জিআরও ইয়াবাসহ আটক ভোলায় জমির মালিকানা দ্বন্দ্বে ২ লক্ষ টাকার গাছ কাটার অভিযোগ ইকবাল ও রুবেলা গংদের বিরুদ্ধে ফকিরহাট পিএসজির সম্মিলিত কার্যক্রম অগ্রগতি পর্যালোচনা ও পরিকল্পনা প্রণয়ন সভা অনুষ্ঠিত ফকিরহাটে তিন মাদ্রাসা শিশু “গলায় ফাঁস” খেলতে গিয়ে একজনের মৃত্যু, গ্রেপ্তার ২ শতবর্ষ উদযাপন উপলক্ষে দাবা টুর্নামেন্টে এন্ট্রি আহবান করিডর বা বন্দর লিজ নয় সংস্কার নিয়ে ভাবুন : মোমিন মেহেদী সাতক্ষীরায় দ্বিতীয় শ্রেণির ছাত্রীকে ধর্ষণের অভিযোগে চতুর্থ শ্রেণীর ছাত্র আটক

চরফ্যাসন পাবলিক লাইব্রেরিতে ৪৭ বছরেও উন্নয়নের ছোয়া লাগেনি

বিশেষ প্রতিনিধিঃ
  • আপডেট সময় : বৃহস্পতিবার, ৯ জানুয়ারি, ২০২৫
  • ৬৩ বার পঠিত

মো. নুর উল্লাহ আরিফ,
চরফ্যাসনের একমাত্র পাবলিক লাইব্রেরিটিতে প্রায় অর্ধশত বছরেও উন্নয়নের ছোয়া লাগে নি। ৪৭ বছরের একটি প্রতিষ্ঠানে যে জৌলুস থাকার কথা তার ছিটেফোঁটা ও প্রতিষ্ঠানটিতে। ফলে হামাগুড়ি দিয়ে চলছে প্রতিষ্ঠানটির কার্যক্রম। অবকাঠামোগত নাজুক অবস্থাসহ লাইব্রেরিটিতে নেই পর্যাপ্ত বই। ফলে লাইব্রেরিটিতে পাঠক শূন্যের কোটায় চলে এসেছে। গতকাল বিকেল ৪ টায় লাইব্রেরিটিতে গিয়ে একজন পাঠকও পাওয়া যায়নি। লাইব্রেরিয়ান ফরহাদ হোসেনের সাথে এ ব্যাপারে কথা হলে তিনি হতাশা প্রকাশ করে জানান পর্যাপ্ত সংখ্যক প্রয়োজনীয় বই না থাকায় পাঠক সংকট চলছে।
দেশের বৃহত্তম একটি উপজেলা দ্বীপজেলা ভোলার চরফ্যাসন। আয়তনে দেশের আঠারটি জেলার চেয়ে বড় এ উপজেলা। বিশাল জনগোষ্ঠী নিয়ে গড়ে ওঠা এ উপজেলা শহরে প্রায় সব ধরনের নাগরিক সুবিধা রয়েছে। স্কুল-কলেজ-মাদরাসাসহ রয়েছে পর্যাপ্ত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান। রয়েছে প্রাইভেট হাসপাতাল, ব্যাংক, বীমা, অফিস, আদালত, সরকারিসহ অসংখ্য বেসরকারি প্রতিষ্ঠান। কিন্তু দুঃখজনক হচ্ছে এখানে নেই আধুনিকমানের সুযোগ সুবিধা সম্মিলিত সরকারি পাবলিক লাইব্রেরি। উপজেলা প্রশাসনের পরিচালনায় যেটি রয়েছে, সেটিও নানান সমস্যায় জর্জরিত। যার জন্য চাকরিপ্রার্থী যুবক, গবেষকদের জন্য ব্যাপক সমস্যা হচ্ছে। রেফারেন্স গ্রন্থের জন্যে হিমশিম খেতে হচ্ছে তাঁদের।
১৯৭৭ সালে চরফ্যাশনের কয়েক জন বিদ্যোৎসাহী, শিক্ষাবিদ, শিক্ষাণুরাগীদের সার্বিক সহযোগিতা ও প্রচেষ্টায় প্রতিষ্ঠিত হয় প্রতিষ্ঠানটি। কিন্তু এর পর দীর্ঘ ৪৭ টি বছর কেটে গেলেও কেউ এর উন্নয়নের জন্য কোন নজর দেয়নি। যার ফলে হামাগুড়ি দিয়ে চলছে লাইব্রেরিটির কার্যক্রম। লাইব্রেরিয়ান ফরহাদ হোসেন আরো বলেন, দীর্ঘ দিন ধরে অনেক চেষ্টা করেছি, অনেকের কাছে গিয়েছি, কোন সহযোগিতা পাইনি। যতদিন বাঁচি এখানে দায়িত্ব পালন করে যাব। নিজের জীবদ্দশায় লাইব্রেরিটির উন্নতি দেখে যেতে পারলে ভাল লাগত। আশা করি আগামী দিনে প্রতিষ্ঠানটির উন্নতি হবে।
২১ টি ইউনিয়ন ১ টি পৌরসভা ও ৪টি থানা নিয়ে গঠিত এ উপজেলা। এ উপজেলায় প্রায় ৬ লক্ষাধিক লোকের বসবাস। ১০ টি কলেজ তিনটি কামিল মাদরাসা ছয়টি ফাজিল মাদরাসা দুই শতকের বেশি মাধ্যমিক স্কুল ও দাখিল আলিম মাদরাসা রয়েছে।
চরফ্যাসন পাবলিক লাইব্রেরির পরিচালনা কমিটির সম্পাদক ফরহাদ হোসেন বলেন, আমি বিভিন্নজনের কাছে গিয়েছি পাবলিক লাইব্রেরির উন্নয়নের জন্য। এমনকি সাবেক এমপি আবদুল্লাহ আল ইসলাম জ্যাকবের কাছেও গিয়েছি। কিন্তু কেউ কোন সাড়া দেয়নি, ফলে খুড়িয়ে চলছে লাইব্রেরির কার্যক্রম। পর্যাপ্ত বিভাগ ওয়ারী বই নেই। সাহিত্য, উপন্যাস, নাটক, রম্যরচনা, গল্প, ভ্রমণকাহিনী,সায়েন্স ফিকশন,শিশুতোস বইসহ রেফারেন্স গ্রন্থ ও ধর্মীয় গ্রন্থের সংখ্যা খুবই অপ্রতুল। আর্থিক দুরাবস্থার কারণে নিয়মিত দৈনিক পত্রিকা রাখা হয় না। মাত্র একটি পত্রিকা রাখা হয়। ফলে পাঠক রেফারেন্সের জন্য দু’চারদিন আগের কোন পত্রিকা খোঁজ করলে দেয়া যায়না। কিছু বই আছে অনেক পুরনো, যা জোরাতালি দিয়ে রাখা। এসব বই নেড়েচেড়ে পড়া সম্ভব নয়।
প্রভাষক ও গবেষক সিরাজ মাহমুদ বলেন, জনগণের বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে পরিচিত গ্রন্থাগার হলো সমাজ উন্নয়নের বাহন। শিক্ষা উন্নয়নের মূল ভিত্তি। শিক্ষার আলোয়ে আলোকিত মানুষ উন্নয়ন মনস্ক হয়। গ্রন্থাগার শিক্ষার আলোকবর্তিকা হিসেবে কাজ করে। একটি জাতির মেধা, মনন, ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির ধারণ ও লালনকারী হিসেবে গ্রন্থাগার গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। গ্রন্থাগারের মাধ্যমে সর্বসাধারণের মধ্যে জ্ঞানের আলো বিতরণের সুযোগ পায়। লাইব্রেরি’ শব্দের বাংলা অর্থ ‘গ্রন্থাগার।’ গ্রন্থাগার হচ্ছে গ্রন্থের আগার বা সংগ্রহশালা। মানুষের জ্ঞান বৃদ্ধির উদ্দেশ্যে এবং মানুষের পাঠের জন্য বিভিন্ন গ্রন্থ যে ঘরে রাখা হয় তাই গ্রন্থাগার। এজন্য যে কোন উপজেলায় ঐ অঞ্চলের মানুষের জন্য পর্যাপ্ত বইসহ আধুনিক সুযোগ সুবিধা সংবলিত একটি সরকারি গ্রন্থাগার থাকা একান্ত প্রয়োজন। কিন্তু আমাদের চরফ্যাশন উপজেলায় এরকম কোন গ্রন্থাগার নেই। আশা সরকারের সংশ্লিষ্ট মহল এ ব্যাপারে নজর দিয়ে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিবে।
প্রভাষক বেলাল শামীম বলেন, একটি জাতির মেধা, মনন, ইতিহাস ঐতিহ্য ও সংস্কৃতির উন্নয়ননের জন্য গ্রন্থাগারের গুরুত্ব অপরিসীম। এজন্য প্রয়োজন পর্যাপ্ত বই সমৃদ্ধ পাবলিক লাইব্রেরির। তিনি আরো বলেন, গ্রন্থাগার নিয়ে রবী ঠাকুর- প্রমথ চৌধুরীসহ অনেকই সাহিত্যিক প্রবন্ধ লিখেছেন। প্রাবন্ধিক প্রমথ চৌধুরীর উক্তি উল্লেখ করে তিনি আরো বলেন ” হাসপাতালে দেহের চিকিৎসা হয়, লাইব্রেরিতে চিকিৎসা হয় মনের।” – এজন্যই প্রতিটি অঞ্চলের মানুষের জন্য একটি সমৃদ্ধ লাইব্রেরি প্রয়োজন। তার দাবি চরফ্যাসনের বিপুল সংখ্যক মানুষের জন্য একমাত্র পাবলিক লাইব্রেরিটিকে সরকারি করার।
গ্রন্থাগার পরিচালনা কমিটির সভাপতি ও উপজেলা নির্বাহি কর্মকর্তা রাসনা শারমিন মিথি বলেন, আমরা উপজেলা প্রশাসন পাবলিক লাইব্রেরির বইসহ যাবতীয় বিষয়ে সমাধানের উদ্যোগ নিয়েছি। আশা করি অচিরেই সমস্যা সমাধান হয়ে যাবে।

Please Share This Post in Your Social Media

এ জাতীয় আরও খবর

ফেসবুকে আমরা